১০বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে যুব মজলিসের মহাসমাবেশে প্রদত্ত মাওলানা মামুনুল হকের ভাষণ ও কিছু কথা

মাওলানা মামুনুল হক সাহেব এমনিতেই সাহসী বক্তব্য রাখেন। দেশের সংকটময় মুহুর্তে তিনি সবসময়ই বিশেষ ভুমিকা রাখেন। তথাপি ৬ ডিসেম্বর বায়তুল মুকাররম এর পশ্চিমপাশে লিংক রোডে অনুষ্ঠিত খেলাফত যুব মজলিসের ১০বছরপূর্তি অনুষ্ঠানে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা এককথায় অসাধারণ, সাহসী, দৃঢ়চিত্তের প্রতিফলন। খুব সংক্ষিপ্ত বক্তব্য হলেও এমন কিছু তিনি তুলে এনেছেন যা খুবই প্রয়োজন ছিল।

দেশের মূল সমস্যাগুলো নিয়ে অনেকেই কথা বলে না। ভয় এবং আতঙ্ক সর্বত্র এমনভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে পিঁয়াজের দাম ২৫০/- টাকা হলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। একটি ভয়াবহ পরিবেশে এমন সাহসী বক্তব্যের জন্য হৃদয়ের গহীন থেকে রক্তিম শুভেচ্ছা জানাই। রাষ্ট্রের সবগুলো সমস্যা তিনি তুলে এনেছেন। একজন পরিপক্ক রাজনীতিবিদের মতোই তিনি কথা বলেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তিনি এসব কথা বলেছেন তার মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই।

অতীতে প্রদত্ত মাওলানা মামুনুল হক সাহেবের হুঙ্কার নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু আজকের বক্তব্য দিয়ে সম্পুর্ণ ভিন্ন ইমেজে নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক। বক্তব্যটি শুনে আমার কাছে মনে হয়েছে, যারা শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, তারা নিজেদের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তিনি আসলেই কি এসব কথা বলছেন? রাষ্ট্রের এমন দুঃসময়ে এতবড় কথা বলার সাহস আর কারও আছে কী না জানি না।

দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তিনি শুধূ তৌহিদী জনতাকেই নয়, দেশের সকল মানুষকে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার কীভাবে অনৈতিকতার স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে তার প্রতিটির প্রতি তিনি ইঙ্গিত করেছেন। বিচার বিভাগ থেকে নিয়ে বিশেষ মহলের হাতে রাষ্ট্রকে তুলে দেওয়ার সকল পায়তারার বিরুদ্ধে তিনি যেভাবে বক্তব্য রেখেছেন তা এক কথায় অতুলনীয়।
বাংলার মুক্তিকামী জনতার প্রতি রাজপথে নেমে আসার জন্য তিনি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। রাজপথে নেমে আসার এই আহবান আশা করি হেলায় যাবে না। রাষ্ট্রযন্ত্রের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার এই আহ্বান খুব প্রয়োজন ছিল। দেশের সকল প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলো যেখানে ব্যর্থ, সেখানে একজন আলেমের কণ্ঠে এমন বক্তব্য অবাক করার মতোই বিষয়।

পল্টন ময়দানে মাওলানা ভাসানীর সেই ভাষণগুলোকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আরও একজন মাওলানা ভাসানীর আবির্ভাব ঘটে গেছে। তিনি যদি দেশের সকল মানুষকে সাথে নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারেন, তাহলে তিনি ইতিহাসে নিজেকে অমর করে নিবেন ইনশাআল্লাহ।

মাওলানা মামুনুল হক সাহেবের কাছে আমাদের আহবান থাকবে, তিনি যেন রাজনীতিকে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে পরিণত করেন। শুধু ইসলাম, শরিয়া কায়েম, আলেম-উলামা, তুলাবাদের নিয়েই পড়ে না থাকেন। মানুষ এখন চরমভাবে হতাশাগ্রস্থ। আতঙ্কিত। এই হতাশা এবং আতঙ্ক দূর করতে হবে। রাষ্ট্রের সীমানার নিরাপত্তায় দেশের আপামর জনতাকে জাগিয়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সকল প্রকার কর্মসূচী দিতে হবে। মহালুটপাটের উৎসব বন্ধে জনগণকে সাথে নিয়ে ময়দানে এগিয়ে আসেন। বীরের মতো সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন।

যুব মজলিস এর জন্য শুভ কামনা।
০৬.১২.২০১৯

মাওলানা মামুনুল হকের অন্যায়ভাবে কারাবন্দীর

Loading..

ফেসবুকে আমরা